পরিচিতি

জন্মঃ ১২ ই চৈত্র রোববার, ১৩৩৪ বাংলা মুতাবিক (নভেম্বর – ১৯২৮) । গ্রামঃ বোয়ালিয়া, ডাকঘরঃ আড্ডাবাজার, উপজেলাঃ বরুড়া, জেলাঃ কুমিল্লা এর এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতাঃ উমর আলী ভূইয়া (মরহুম), মাতাঃ গোলাপ জাহান (মরহুমা) । তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয় । পিতা ছিলেন ব্যাবসায়ী ও বেশকিছু কৃষি জমির মালিক ।

শিক্ষা জীবনঃ স্থানীয় স্কুল ও মাদ্রাসায় প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে ১৯৪৯ সালে ঢাকা সরকারী আলীয়া মাদ্রাসায় তিনি আলিম ক্লাসে ভর্তি হন । অত্র ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সুনামের সহিত যথাক্রমে আলিম (১৯৫২), ফাযিল (১৯৫৬) ও ১৯৫৭ সনে কামিল (মমতাজুল মুহাদ্দেসীন) ডিগ্রী লাভ করেন। পরবর্তী সময় তিনি ঢাকাস্থ  তিব্বিয়া হাবিবিয়া কলেজে হাকীমী শাস্ত্র অধ্যায়ন করেন।

কর্মজীবনঃ কর্মজীবনের শুরুতে তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন । পরবর্তীতে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে (১৯৭১-১৯৯৬) ২৫ (পঁচিশ) বছর ইসলাম শিক্ষা বিভাগে কর্মরত থাকার পর অবসর গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৩ সালের পয়লা জুন থেকে মোহাম্মদপুর জামে মসজিদে খতীব ও ইমামের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসায় ছাত্রাবস্থায় ঢাকা হলের (বর্তমানে শহীদুল্লাহ হল) পাশে ঐতিহাসিক মূসা খাঁর মসজিদে থাকতেন। ১৯৪৬ সাল থেকে ১৯৬৩ সালের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি এই মসজিদের অবৈতনিক ইমাম ছিলেন তিনি মূসা খাঁর মসজিদে ইমাম হিসাবে কর্মরত থাকাকালীন সময়ে তমদ্দুন মুজলিশের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবুল কাশেম ( পরে প্রিন্সিপাল) সাহেবের সান্নিধ্য লাভ করেন। অধ্যাপক কাশেম সাহেব প্রায়শই নামাযের আগে বা পরে তাঁর হূজরাখানায় আসতেন এবং এই আলাপচারিতার মাধ্যমে ভাষা সৈনিক আমীমী ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য অনুপ্রানিত হন।

১৯৫২ সালে আলিম ক্লাসের ছাত্র থাকা অবস্থায় রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবীতে বায়ান্নোর অমর একুশে ফেব্রুয়ারি মিছিলে তিনি একজন অংশগ্রহণকারী ও প্রত্যক্ষদর্শী। বায়ান্নোর একুশে ফেব্রুয়ারি যা দেখেছি শিরোনামে তাঁর সেই অভিজ্ঞতা ৯ ফালগুণ ১৩৯২ তারিখের অধুনালুপ্ত দৈনিক বাংলা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এছাড়া বাংলা একাডেমী কর্তৃক প্রকাশিত একুশের স্মারক গ্রন্থ ৯০ এ বায়ান্নোর একুশে ফেব্রুয়ারি যা দেখেছি শিরোনামে তাঁর উক্ত নিবন্ধ বর্ধিত আকারে পুনঃপ্রকাশিত হয়। তৎকালীন দৈনিক দেশ পত্রিকায়ও একুশ মানে শিরোনামে উক্ত নিবন্ধটি পুনঃপ্রকাশিত হয়। বহ্নি শিখা ২১ শে সংকলন ১৯৮৬ তেও এটি ছাপা হয়।

জনাব আমীমী বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনের একজন সাহসী সৈনিক একইসাথে তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধেও সক্রিয় ভূমিকা রাখেন । মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অংশগ্রহণের বিবরণ একাত্তরের চেপে রাখা ইতিহাস আলেম মুক্তিযোদ্ধার খোঁজে শীর্ষক গ্রন্থ ও মুক্তিযুদ্ধ ও মোহাম্মাদপুর ও ধানমন্ডি শীর্ষক গ্রন্থে লিপিবদ্ধ হয়েছে।